নিখোঁজ বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার : খুন করা হয়েছে বলে দাবী পরিবারের

13th December 2020 8:08 pm বর্ধমান
নিখোঁজ বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার : খুন করা হয়েছে বলে দাবী পরিবারের


নিজস্ব সংবাদদাতা ( কালনা ) :  দুদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর জলাশয় থেকে উদ্ধার হল এক বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ। মৃতের নাম শুকদেব প্রামাণিক(৩৫)। পরিবারের তরফ থেকে তাকে খুন করা হয়েছে বলে দাবী করা হয় । ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় রাজনৈতিক মহলে । মৃৃৃতের বাড়ি নিমদহ এলাকায়। বিজেপি কর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করেন ও বিক্ষোভ দেখান।এই ঘটনায় কারা জড়িত সে বিষয়ে কোন স্পষ্ট কথা জানায় নি পরিবার । বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে ।যদিও এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয় বলে জানায় তৃণমূল নেতৃত্ব।
                     স্থানীয় ও মৃতের পরিবারসূত্রে জানা যায় যে,পূর্বস্থলীর নিমদহের চাঁদপাড়ার বাসিন্দা শুকদেব প্রামাণিক বিজেপির বুথস্তরের কর্মী ছিলো।আর পেশা হিসাবে তার একটি চায়ের দোকানও রয়েছে।সাতমাস আগেই রায়গন্জে তার বিয়েও হয়।পরিবারের লোকেরা জানান,শুকদেব গত শুক্রবার স্থানীয় এলাকায় বিজেপির মিটিং সেরে বাড়ি ফিরে আসে।এরপর ওইদিনই রাতেই বাড়ি বেরোনোর পরেই হঠাৎই সে নিখোঁজ হয়ে যায়।দু-দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর রবিবার তার পরিবার পূর্বস্থলী থানায় বিষয়টি জানাবে বলে ঠিকও করে নেয়।এরমধ্যেই ওইদিনই দুপুর ২ টো নাগাদ বাড়ির অদূরেই একটি জলাশয় থেকে তার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।পরিবারের দাবি তাদের ছেলেকে খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে।এই বিষয়ে মৃত যুবকের বাবা সুনীল প্রামাণিক বলেন,‘আমার ছেলে বিজেপি করে।শুক্রবার বিজেপির একটি মিছিল করে বাড়ি ফেরে।বাড়িতে খাওয়া দাওয়াও করে।এরপর রাত ১১ টার পর থেকে ছেলে নিখোঁজ হয়ে যায়।স্থানীয় জল জঙ্গল সর্বত্র খুঁজেছি।যদি কেউ মেরে ফেলে রাখে এই ভেবে।কোথাও খুঁজে পাইনি।দুপুর দুটো নাগাদ বাড়ির কাছেই হাঁটুজলের একটি ঘাট থেকে ছেলের দেহ উদ্ধার হয়।আমি যখন খোঁজাখুঁজি করি তখনও ওই ঘাটে পাড়ার মেয়েরা কাপড় কাচছিলো,স্নান করছিলো।ওই ঘাট থেকেই দেহ উদ্ধার হয়।আমি যখন খুঁজি তখন ওই লাশ ছিলো না।ওইখানেই আমি তিনবার খুঁজেছি,কিন্তু পাইনি।এই রহস্যজনক ঘটনা থেকেই বুঝতে পারছি আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে।আমার ছেলেকে যারা মেরেছে সেই দোষী ব্যক্তির শাস্তি চাই।’এই ঘটনার পরেই বিজেপি নেতৃত্ব রাস্তায় নামে।পথ অবরোধ করে।টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে।ব্যাপক যানজট তৈরী হয়।এই বিষয়ে বর্ধমান পূর্বের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন,‘বিজেপির মিছিলে যাওয়া ও জয়শ্রী রাম বলার কারণে আমাদের এই কর্মীকে খুন করা হয়েছে।কারণ শুকদেবের হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যাওয়া তারপরেই আজ মৃতদেহ উদ্ধার এই থেকেই সব রহস্যই উদ্ঘাটন হয়ে যায়।সারা রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের এইভাবেই খুন করা হচ্ছে।আর সেইসব ঘটনা তৃণমূলই করছে। থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ দেখানো হবে।’যদিও এই খুনের ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই জানান স্থানীয় তৃণমূল নেতা তপন চট্টোপাধ্যায়।এই বিষয়ে তিনি বলেন,‘এখানে বিজেপির তিনটি দল।গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে রয়েছে।শুধু তাই নয় খবর নিয়ে জানতে পারি ওই যুবকের পারিবারিক অশান্তিও রয়েছে চরম পর্যায়ে।নতুন করে ইস্যু খোঁজার জন্যই কোনো ঘটনা ঘটলেই এখন তৃণমূলকে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।এটাও তাই।’এই বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন,‘অভিযোগ পেয়েছি।কেস শুরু করে।ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।